একবার খলিফা হারুনুর রশীদের নিকট এক নাস্তিক এসে বললেন যে,
“আপনার সাম্রাজ্যে এমন কোন জ্ঞানী ব্যক্তিকে ডাকুন, আমি তাকে তর্ক করে প্রমান করে দেব যে এই পৃথিবীর কোন স্রষ্টা নেই । এগুলো নিজে নিজে সৃষ্টি হয়েছে এবং আপনা থেকেই চলে ।”

খলিফা হারুনুর রশীদ কিছুক্ষন ভেবে একটি চিরকুট মারফত ইমাম আবু হানিফাকে ডাকলেন ও এই নাস্তিকের সাথে বিতর্কে অংশ নিতে অনুরোধ করলেন ।

ইমাম আবু হানিফা খবর পাঠালেন যে, তিনি আগামীকাল যোহরের সময় আসবেন, খলিফার প্রাসাদে নামায পড়ে তারপর বির্তকে অংশ নেবেন ।পরদিন যোহরের নামাযের সময় খলিফা, তার সভাসদবর্গ ওনাস্তিকটি অপেক্ষা করতে লাগল। কিন্তু যোহরের নামায তো দূরের কথা আসর শেষ হয়ে গেল তিনি মাগরীবের নামাযের সময় আসলেন । নাস্তিকটি তাঁর কাছে এত দেরীতে আসার কারন জানতে চাইল।

তিনি বললেন,
“আমি দজলা নদীর ওপারে বাস করি । আমি খলীফার দাওয়াত পেয়ে নদীতে এসে দেখি কোন নৌকা নেই । অনেকক্ষন অপেক্ষা করেও কোন নৌকা পেলাম না । সহসা আমি দেখলাম একটি গাছ আপনা-আপনি উপড়ে পড়ল । তারপর সেটি নিজ থেকেই তক্তায় পরিনত হল । তারপরএটি নিজে নিজে একটি নৌকায় পরিনত হল । অত:পর আমি এটায় চড়ে বসলাম । নৌকাটি নিজে নিজে চলতে চলতে আমাকে এপারে পৌছিয়ে দিল ।

নাস্তিকটি একথা শুনে হো হো করে হেসে ফেলল । তারপর বলল, “ইমাম সাহেব আমাকে কি বোকা পেয়েছেন যে আমি এমন গাজাখুরি গল্প বিশ্বাস করব ? একটা গাছ আপনা থেকে নৌকায় পরিনত হবে এটা কি করে সম্ভব ?”

ইমাম আবু হানিফা বললেন, “ওহে নাস্তিক সাহেব ! একটা গাছ যদি আপনা থেকে নৌকায় পরিনত না হতে পারে এবং নদী পরাপার না হতে পারে, তাহলে কিভাবে এই বিশাল আকাশ, চন্দ্র- সূর্য-নক্ষত্র আপনা-আপনি তৈরী হতে এবং চালু থাকতে পারে ?”

নাস্তিকটি লা-জওয়াব হয়ে মুখ কাচুমাচু করে বিদায় নিল । খলিফা হারুনুর রশীদ তাঁর তাৎক্ষনিক জবাবে মুগ্ধ হয়ে ইমাম সাহেব কে সসম্মানে বিদায় দিলেন।
সুবহানাল্লাহ